আমরা সবসময়ই স্বাভাবিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নিই। কিন্তু জানেন কি? আমাদের শরীরের ভেতরে কাজ করা হরমোনও আমাদের সৌন্দর্য রক্ষায় বিরাট ভূমিকা রাখে। এই হরমোনের মধ্যে রানি হলো ইস্ট্রোজেন, যাকে আমরা ‘সৌন্দর্যের হরমোনৃে’ বলে থাকি।
কেন ইস্ট্রোজেনকে সৌন্দর্যের হরমোন বলা হয়?
ত্বকের জন্য: ইস্ট্রোজেন আমাদের ত্বককে মসৃণ ও টানটান রাখতে কোলাজেন তৈরি করে। এছাড়া, ত্বকের তৈলাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে ব্রণের সমস্যা কম হয়।
চুলের জন্য: চুলের বৃদ্ধি, ঘনত্ব ও মসৃণতা বাড়াতে ইস্ট্রোজেনের ভূমিকা অপরিহার্য। এটি চুল ভাঙা ও ঝরে পড়াও রোধ করে।
নখের জন্য: ইস্ট্রোজেন নখকে শক্তিশালী করে এবং তাদের বৃদ্ধি ঘটায়।
অন্যান্য উপকারিতা: হাড়কে শক্তিশালী রাখা, শরীরের চর্বি বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করা, মেজাজ ভাল রাখা ইত্যাদি সবই ইস্ট্রোজেনের কাজ।
ত্বকের হরমোন কী কী?
আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের হরমোন কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে স্টেরয়েড জাতীয় ইস্ট্রোজেন, অ্যামাইনো অ্যাসিড জাতীয় অক্সিন, আইকোসানয়েড জাতীয় প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন, প্রোটিন জাতীয় ইনসুলিন এবং গ্যাস জাতীয় ইথিলিন।
অতএব শুধু বাইরে থেকে ত্বকের যত্ন নয়, ভেতর থেকেও শরীরকে সুস্থ রাখলেই সুন্দর ত্বক পাওয়া সম্ভব।
ইস্ট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য খাদ্য তালিকা
ইস্ট্রোজেন আমাদের শরীরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। এটি ত্বক, চুল এবং অন্যান্য অঙ্গের স্বাস্থ্যের জন্য দায়ী। তাই ইস্ট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা খুবই জরুরি।
কিছু খাবার ইস্ট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করতে পারে:
সয়াবিন: সয়াবিনে আইসোফ্লেভোন নামক পদার্থ থাকে যা ইস্ট্রোজেনের মতো কাজ করে। তাই সয়াবিন, টোফু, মটরশুটি ইত্যাদি খাবার খাওয়া উপকারী।
তিসি: তিসিতে লিনাগন নামক পদার্থ থাকে যা শরীরে ইস্ট্রোজেনে রূপান্তরিত হতে পারে।
কুমড়া বীজ: কুমড়া বীজে জিঙ্ক থাকে যা ইস্ট্রোজেনের উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে।
আখরোট: আখরোটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে যা হরমোন ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ফল ও শাকসবজি: বিভিন্ন রঙের ফল ও শাকসবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে মুক্ত র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং হরমোন ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে।
পুরো শস্য: পুরো শস্যে ফাইবার থাকে যা হরমোন ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে।
দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য: দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যে ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল এবং ইস্ট্রোজেনের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আরো পড়ুন: নিজেকে জানুন, আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন
কিছু খাবার এড়ানো উচিত:
প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবারে কৃত্রিম হরমোন থাকতে পারে যা শরীরের হরমোন ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি: অতিরিক্ত চিনি ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা ইস্ট্রোজেনের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে।
কফি ও চা: অতিরিক্ত কফি ও চা ইস্ট্রোজেনের মাত্রাকে কমিয়ে দিতে পারে।