ত্বকের সুরক্ষা ও সুস্থতা বজায় রাখতে অনেক সময় ব্যয় করার প্রয়োজন নেই। মাত্র ১০ মিনিটেই আপনার ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ রাখা সম্ভব। এখানে ৫ টি সহজ ধাপে স্কিন কেয়ার রুটিন তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে একটি প্রাণবন্ত ত্বক উপহার দেবে।
১. ক্লিনজিং – ২ মিনিট
মুখ পরিষ্কার করার প্রয়োজনীয়তাঃ মুখ পরিষ্কার করা ত্বকের যত্নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ধুলো-ময়লা, ব্যাকটেরিয়া এবং মেকআপের অবশিষ্টাংশ ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি করে। একটি মাইল্ড ক্লিনজার ব্যবহার করে দিনে দুবার মুখ পরিষ্কার করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে আপনার মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার বাছাই করা জরুরি। শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ফোমিং ক্লিনজার ভালো। মুখ পরিষ্কার করার সময় হালকা হাতে মাসাজ করুন এবং গরম পানির পরিবর্তে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন।
অতিরিক্ত টিপস: আপনার ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সপ্তাহে একবার স্ক্রাব করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্ক্রাব ব্যবহার করে আপনি ত্বকের উপর জমে থাকা মরা কোষগুলো সহজেই দূর করতে পারবেন। এই মরা কোষগুলোই ত্বককে ম্লান ও রুক্ষ করে তোলে।
২. টোনিং – ২ মিনিট
টোনারের ভূমিকাঃ টোনার – আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখার মন্ত্র ! ক্লিনজিংয়ের পরে টোনার ব্যবহার করা ত্বকের যত্নে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কল্পনা করুন, আপনি মুখ ধুয়েছেন, কিন্তু ত্বকের গভীরে এখনও কিছু ময়লা বা অবশিষ্ট ক্লিনজার থেকে গেছে। এই অবস্থায় টোনার আপনার ত্বকের জন্য একটি রক্ষাকবচের মতো কাজ করে।টোনারের কাজ হল ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখা, ছিদ্র পরিষ্কার করা এবং ত্বককে টানটান রাখা। এটি ত্বকে প্রয়োগ করার কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই।
অতিরিক্ত টিপস: একটি কটন প্যাডে কিছুটা টোনার নিয়ে মুখে আলতো করে মাসাজ করুন।চোখের আশেপাশের এড়িয়ে চলুন।দিনে দুবার, সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করুন।
৩. ময়শ্চারাইজিং – ২ মিনিট
ময়শ্চারাইজারের গুরুত্ব: টোনিংয়ের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ত্বকের যত্নের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ময়েশ্চারাইজার ত্বককে আর্দ্র রাখে, শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের বাধা শক্তিশালী করে। গরমকালে জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত, কারণ এটি হালকা হয় এবং ত্বককে তৈলাক্ত করে না। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বাছাই করা এবং সকালে ও রাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
অতিরিক্ত টিপস: ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পর আঙুল দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করা ত্বকের যত্নে একটি সহজ কিন্তু কার্যকর পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি নিয়মিত অনুসরণ করলে আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য উন্নত হবে।
৪. সানস্ক্রিন – ২ মিনিট
সানস্ক্রিন: দিনের বেলায় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এই রশ্মি ত্বকে কালো দাগ, বলিরেখা এবং ত্বক ক্যান্সারের মতো গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। সানস্ক্রিন ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে একটি বাধা দেয় এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।সানস্ক্রিনের SPF কমপক্ষে 30 হওয়া উচিত ।সানস্ক্রিন প্রতি দুই ঘন্টায় এবং ঘাম বা সাঁতারের পর পুনরায় লাগান।
৫.নাইট ক্রিম -২ মিনিট
নাইট ক্রিম: রাতে শুয়ে থাকাকালীন ত্বক নিজেকে মেরামত করার কাজ করে। এই সময় ত্বককে যথাযথ পুষ্টি ও আর্দ্রতা দেওয়া জরুরি। ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে রাতে নাইট ক্রিম ব্যবহার করা উত্তম। নাইট ক্রিম ত্বককে গভীরভাবে ময়শ্চারাইজ করে এবং কোষ পুনর্জীবন প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল, কোমল এবং তরুণ দেখায়।আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী নাইট ক্রিম বাছাই করুন।নাইট ক্রিমে হাইয়ালুরোনিক অ্যাসিড, ভিটামিন ই এবং পেপটাইড থাকলে তা আরও ভালো। নাইট ক্রিম ত্বককে গভীরভাবে আর্দ্র করে এবং কোষ পুনর্জীবনকে উদ্দীপিত করে।
অতিরিক্ত টিপস: সানস্ক্রিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন এবং মুখের পাশাপাশি ঘাড়ও ভালোভাবে ঢাকুন। নাইট ক্রিম ব্যবহারের সময় মুখের হালকা ম্যাসেজ করুন যাতে এটি ত্বকে ভালোভাবে প্রবাহিত হয়। প্রতিদিন সানস্ক্রিন এবং নাইট ক্রিম ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
এই ৫ টি ধাপ অনুসরণ করে আপনি সহজেই ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন এবং আপনার ত্বক থাকবে সুস্থ ও উজ্জ্বল।সুষম খাদ্য খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমিয়ে নিন। দিনের এবং রাতে এই সহজ রুটিন ফলো করে আপনার স্কিন কেয়ারকে আরও সহজ ও কার্যকরী করে তুলুন।